টিপস

এসইও-র ১০ টিপস

সবাই চায় তার ওয়েবসাইটটি গুগল কিংবা বিংয়ের সার্চে সবচেয়ে ওপরের দিকে থাকুক। সেটা করতে গিয়েই একটি টার্ম খুব প্রচলিত। সেটা হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও)। অর্থাত্ সার্চ ইঞ্জিনগুলো কীভাবে আপনার ওয়েবসাইটকে এনালাইসিস করছে এবং কীভাবে সেটা সার্চের ফলাফল হিসেবে নিয়ে আসছে, সেটা অপটিমাইজ করা। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, কোনো কিছু দিয়ে গুগলে গিয়ে সার্চ করলে যেন আপনার পৃষ্ঠাটি প্রথমে চলে আসে। তাতে আপনার পৃষ্ঠায় ট্রাফিক বেশি আসবে। বেশি মানুষ আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করবে, যদিও পুরোপুরি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ করা একটি বেশ জটিল বিষয়। তবুও কিছু ছোট ছোট পদক্ষেপ আপনাকে অনেক সাহায্য করতে পারে। আর যারা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) নিয়ে আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করতে চান, তারা বেসিক বিষয়গুলো এখান থেকে জেনে নিতে পারেন।
প্রথমত : আপনি যে কাজটি করতে পারেন, তা হলো আপনার ওয়েবসাইটটির একটি গ্লোবাল অবস্থান (ranking) জেনে নিতে পারেন। এর জন্য মোটামুটি একটি ওয়েবসাইট হলো অ্যালেক্সা.কম (http://WWW.alexa.com)| বিখ্যাত অ্যামাজন.কম এই ওয়েবসাইটটি পরিচালনা করে থাকে। সেখানে গিয়ে যদি ওয়েবসাইটের ঠিকানাটি লিখে দিন, তাহলে দেখতে পাবেন সাইটের অবস্থান (ranking) কোথায়। তবে একটি বিষয় এখানে বলে রাখা ভালো যে, অ্যালেক্সাতে ওয়েবসাইটের অবস্থান পুরোপুরি সঠিক নয়। তবে মোটামুটি একটা ভালো গাইডলাইন পাওয়া বটে। আপনার লক্ষ্য হবে সেই অবস্থানটিতে ওপরের দিকে ওঠা; অর্থ্যাত্ ১ হলো সর্বোচ্চ অবস্থান। দশ হাজার হলো নিচের দিকের অবস্থান।
দ্বিতীয়ত : আপনার ওয়েবসাইটটি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে রেজিস্ট্রেশন করুন। এটা করতে বিভিন্ন রকমের সফটওয়্যার পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার না করে, সরাসরি নিজেই কাজটি করতে পারেন এই ঠিকানায়—
http://www.google.com/addurl/?continue=/addurl
তৃতীয়ত : প্রতিটি ওয়েব পেজের একটি টাইটেল থাকে। সেই টাইটেলটি থেকে সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারে, এই পৃষ্ঠাটি কিসের ওপর নির্মিত। এখানে আরেকটি কথা বলে নেয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের রয়েছে রোবট, যা বিভিন্ন সময়ে গিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে পড়ে নিয়ে আসে। আমরা মানুষ যখন ইন্টারনেট ব্রাউজ করে ওয়েব পেজ ব্রাউজারে লোড করি, একইভাবে রোবটগুলো (মূলত সফটওয়্যার) বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে সব পৃষ্ঠা নিজের কাছে নিয়ে আসে। তারপর বিভিন্ন রকম অ্যালগরিদমের ভিত্তিতে সেই পৃষ্ঠাটিকে অ্যানালাইসিস করে থাকে। পৃষ্ঠার টাইটেল হলো তেমন একটি প্যারামিটার। এটা অনেকটা বাড়ির নামের মতো—বাড়ির নাম যদি হয় ‘নিরিবিলি’ তাহলে রোবট ধরেই নেবে, এই বাড়িটি হবে শান্ত ধরনের। আর বাড়ির নাম ‘নিরিবিলি’ দিয়ে কাজে দেখালেন হট্টগোল, তাহলে আপনি ধরা খেলেন। তাই টাইটেলটি হতে হবে অর্থবহ। কিন্তু টাইটেলে অযাচিত কি-ওয়ার্ড দিয়ে ভরে রাখবেন না। তাহলে ওগুলোকে স্প্যাম হিসেবে গণ্য করা হবে। আবার প্রতিটি পেজের টাইটেল যেন আবার একই না হয়।
চতুর্থত : যতটা সম্ভব আপনার যে কোনো পৃষ্ঠায় অন্য কিছু পুরনো পৃষ্ঠার লিংক দিন। এই লিংকগুলো থেকে রোবটগুলো বুঝতে পারে, এই পৃষ্ঠাটি ঠিক কিসের ওপর তৈরি করা। রোবটগুলো আমাদের ভাষা ততটা বুঝতে পারে না (কিছুটা পারে)। তাই এমন লিংক থেকে বুঝতে পারবে—কোথায় কোথায় এবং কোন কোন পৃষ্ঠার জন্য লিংক দিচ্ছেন। তার অর্থ হলো, এই পৃষ্ঠাতে নিশ্চই তেমন সব জরুরি বিষয় রয়েছে, নইলে আপনি লিংক দেবেন কেন? এই যুক্তিতে রোবটগুলো বুঝতে পারবে আপনার তৈরি পৃষ্ঠাটি কিসের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
পঞ্চমত : অন্যান্য ভালো ওয়েবসাইটের সঙ্গে সখ্য করুন। অর্থাত্ ভালো কোনো ওয়েবসাইট যদি আপনার ওয়েবসাইটকে তার কোনো লেখায় কিংবা পৃষ্ঠায় লিংক দেয়, তাহলে রোবট বুঝতে পারে আপনার ওয়েবপেজটি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ধরুন, সিএনএন কিংবা বিবিসি যদি আপনার কোনো পৃষ্ঠার লিংক তাদের কোনো পেজে ব্যবহার করে, তাহলে তার মূল্য অনেক বেশি হবে। তাই ভালো ভালো ওয়েবসাইটগুলোর সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করুন।
ষষ্ঠত : এবারে উল্টোটা দেখে নিন। ওপরের যেখানে বললাম যে, অন্য কোনো সাইট যদি আপনার সাইটের রেফারেন্স দিয়ে থাকে, তাহলে আপনার সাইটটির মান ভালো। এবারে আপনি করলেন কি, চালাকি করে নিজেই কিছু সাইট বানিয়ে কিংবা আপনার বন্ধুদের সাইট থেকে নিজের সাইটে লিংক দিলেন। অনেক সময় অনেকেই টাকার বিনিময়ে লিংক এক্সচেঞ্জ করে থাকে। এই ধরনের ওয়েবপেজগুলোর রেপুটেশন ভালো নয়। আপনার সাইট যদি সেই খারাপ রেপুটেশনের কোনো ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে তার জন্য সাইটিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই অসত্সঙ্গ পরিহার করুন।
সপ্তমত : ছবির সঙ্গে ্তুঅখঞ্থ ট্যাগটি ব্যবহার করুন। রোবটগুলো ছবি দেখে বুঝতে পারে না, এটা কিসের ছবি। কিন্তু আপনার অখঞ ট্যাগটি দিয়ে বলে দিতে পারেন, এই ছবিটি কিসের। তা অনেক উপকারে আসবে।
অষ্টমত : মাঝে মাঝে কিছু কিছু শব্দ বোল্ড করতে পারেন, কিন্তু খুব বেশি নয়। কারণ সেটা পাঠককে যেমন বিরক্ত করে, সেটা রোবটগুলোরও বিরক্তি তৈরি করে।
নবমত : সাইটটি যদি অনেক বড় হয়, তাহলে একটি ‘সাইট ম্যাপ’ তৈরি করতে পারেন। মনে রাখবেন, একটি ওয়েবসাইট মানুষের জন্য যতটা সুবিধার হবে, সার্চ ইঞ্জিন তাকেই খুঁজে বের করতে চাইবে। এই সরল বিষয়টি মাথায় রেখে কাজে নেমে যান।
দশমত : যারা ফ্রিল্যান্স কাজ করতে চান, তাদের একটি বড় চাহিদা হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ করা। হাজার হাজার ওয়েবসাইট তাদের পৃষ্ঠাকে সার্চ ইঞ্জিনের সবচেয়ে প্রথমে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাই আপনার কাজ পেতে কোনো সমস্যা হবে না। আপনাদের যে কাজটি বেশি করতে হবে, তা হলো, ওয়েব পেজটি পড়ে সেখান থেকে যথার্থ কি-ওয়ার্ডগুলো বের করতে হবে। অর্থাত্ আপনাকে বুঝতে পারতে হবে, ওই পেজটি কোন বিষয়ের ওপর লেখা, ওটা কি একটি কসমেটিক্স পণ্যের ওপর, নাকি ওটা কোনো চিকিত্সা সংক্রান্ত ওয়েব পেজ। তারপর কি-ওয়ার্ডগুলো সেই পেজে বসিয়ে দিতে হবে।

No comments:

Post a Comment